Swami Vivekananda and Netaji
দক্ষিণেশ্বর ! মা ভবতারিণীর মন্দির !
ঈশ্বরকে পাওয়ার অটুট ইচ্ছা !
মুখে ভক্তি রসান্বিত শ্যামা সংগীত !
এই বাক্য গুলি শুনলেই প্রথমেই আমাদের মনে আসে স্বামী বিবেকানন্দের কথা। তবে স্বামী বিবেকানন্দ ছাড়াও আর একজন সাধক ছিলেন, যিনি শুধু ভারতকে বন্ধন থেকে ছিন্ন করতে চাননি। বরং নিজেকেও মায়ার বন্ধন থেকে ছিন্ন করতে চেয়েছিলেন।
হ্যাঁ, তিনি হলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
ছোট্ট সুবি , ছেলেবেলা থেকেই স্বামী বিবেকানন্দ এর আদর্শ ও মায়ের প্রতি তাঁর গভীর ভক্তি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের সমগ্র জীবন পরিচালনা করেছেন।
নেতাজির আদর্শ হয়ে উঠেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ, এবং তিনিও মায়ের প্রতি সেই নিবিড় ভক্তি নিয়ে বেড়ে ওঠেন। মা কালী নেতাজির অন্তরে শক্তির উৎস হিসেবে স্থান করে নিয়েছিলেন।

দেশত্যাগের পূর্বে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে গিয়ে মা ভবতারিণীর পায়ের ফুল নিয়ে যান নেতাজি।জীবনের প্রতিটি পর্বে তিনি মা কালীর আশীর্বাদে শিক্ত থাকতেন। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের প্রতি ছিল তাঁর এক গভীর আকর্ষণ। নৌকায় বেলুড় মঠ যাত্রার সময় শ্যামাসঙ্গীত গাইতেন, সঙ্গে থাকতেন প্রফুল্ল সরকারের মতো প্রিয়জনেরা।
১৯৪১ সালে দেশত্যাগের ঠিক আগে, গৃহবন্দী অবস্থায় ভাইজি ইলা বসুকে পাঠান মায়ের পায়ের ফুল আর চরণামৃত আনতে।
তিনি সংকল্প করেছিলেন, মায়ের আশীর্বাদ নিয়েই দেশত্যাগ করবেন। এমনকি কারাগারেও মা কালীর উপাসনা চালাতেন তিনি । কালীপুজোর দিনেই প্রেসিডেন্সি জেলে অনশন শুরু করেছিলেন। কালীমাতার প্রতি তাঁর সেই অটুট বিশ্বাস যেন তাঁকে সংগ্রামে সাহস জোগাত।
সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ সরকার গঠনকালে, রামকৃষ্ণ মিশনে প্রার্থনায় নিজেকে তন্ময় করে তুলতেন তিনি। শৈশবে মা কালীর করালরূপের চিত্রে অভিভূত নেতাজি যেন সেই শক্তির মাধ্যমেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে।
এর জন্যই হয়তো-বা “গুমনামি বাবা” – র নাম আমাদের কাছে এসে পৌঁছয় ।
লেখা : অভিজিৎ মান্না।
রচনাকাল : ২৮ অক্টোবর , ২০২৪