Coffee House : কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই – আজ আর নেই – কেনো নেই ? সেই প্রসঙ্গে আসছি। তার আগে কিছু কথা বলে নিই।
কলেজ স্ট্রিটের রাস্তা, বইয়ের গন্ধ এবং ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটির বাইরে ডিম টোস্ট – এই সবকিছুই আমার ভীষণ প্রিয়।
বই কেনার বাতিক আমার অনেক দিনের । হাতের কাছে যা টাকা পাই, তাই দিয়েই বই কিনে ফেলি।ফলত মাঝে মধ্যেই দক্ষিণ কলকাতার জটলা থেকে একটু শান্তি পেতে বইয়ের গন্ধ এর টানে চলে যাই কলেজ স্ট্রিটের রাস্তায়, বইয়ের দোকানে।
এবার কলেজ স্ট্রিট যাচ্ছি, কিন্তু কফি হাউস যাব না , তা কি আবার হয় নাকি!
কফি হাউসের সংস্কৃতি বাঙালির জীবনে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। কফি হাউস মানে শুধু কফির কাপে চুমুক দেওয়া নয়, এটি এক ধরনের সামাজিক মিলনক্ষেত্র যেখানে মানুষের চিন্তা, আলোচনা, আর্ট, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটে।

কফি হাউসের ঐতিহ্যগত পরিবেশে বসে আড্ডা দেওয়া, নতুন নতুন ভাবনা শেয়ার করা, এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো যেন আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে বহুযুগ ধরে। এখানেই নিয়মিত যাতায়াত ছিল মান্না দে থেকে সত্যজিৎ রায় এর।
এখানেই জন্ম নিয়েছে নতুন নতুন আইডিয়া, সৃষ্টি হয়েছে সাহিত্যের নতুন মাইলস্টোন, আর শোনা গিয়েছে নানান পপুলার কবিতার পঙক্তি।
এবার আসি -কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই – আজ আর নেই – কেনো নেই ? সেই প্রসঙ্গে –
ধীরে ধীরে সময় বদলেছে, বদলেছে মানুষের চিন্তা বইয়ের বদলে মানুষের হাতে চলে এসেছে ই-বুক , পিডি এফ, ফলত কেনো তারা বই কিনবে ! যেখানে সব ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে !
তবে কি আজও রবীন্দ্রনাথের “রক্তকরবী” আমাদের জীবনে সমান প্রযোজ্য ?
সত্যিই কি টেকনোলজি মানুষকে অলস তৈরি করছে ?
নাকি পিছিয়ে দিচ্ছে ?
তার বিচার আপনাদের উপরেই ছাড়লাম।
ফলত এখন বই প্রেমী মানুষ কফি হাউসে বিরল বললেই চলে।
তবে হ্যাঁ, সবাই কিন্তু এখনো যন্ত্রচালিত হয়ে যায়নি।
আজও কিছু মানুষ মাসের ১০ তারিখ স্যালারি পেয়ে , স্যালারির খাম নিয়ে চলে আসেন বই কিনতে।
তবে কফি হাউসের খাবারের কোয়ালিটি এখন হয়েছে খুবই দুঃখজনক। ওখানে এখন পাওয়া যায় অনেক প্রকার চাইনিজ খাবার, যা মুখে তোলার একেবারে অযোগ্য।
ফলত গুটিকতক মানুষজন ছাড়া, কফি হাউজে এখন মানুষ আসেন , নিজেকে ইন্টেলেকচুয়াল প্রমাণ করতে, অথবা সো কলড রিলস করতে।
ছবি : কফি হাউস
লেখা : অভিজিৎ মান্না।